প্রিয় পাঠক কিছুদিন আগে লেখেছিলাম-‘চোখের জল আটকাতে পারেনি’ ফেসবুকে পুরানো ছবি দিয়ে আবেগে ভাসলেন আমজনতার অন্তর জুড়ে জুই-চামেলি। আমি আজকের লেখাটি আমার শ্রদ্ধয় কলামিষ্ট নঈম নিজাম ভাইয়ের লেখার অংশ দিয়ে ১ম পূর্ব শুরু করতে চাই ।
‘বন্ধু তোমার পথের সাথীকে চিনে নিও, মনের মাঝেতে চিরদিন তাকে ডেকে নিও’ শ্রীকান্তের এ গানের মতো পথের সাথীকে কি চেনা যায়? মনের মাঝেতে কি দেওয়া যায় ঠাঁই? এ কঠিন ইট-পাথরের চলার পথে নানা রঙের মানুষের দেখা মেলে। সবাইকে চেনা যায় না।
হৃদয়ের গহিনে ঠাঁই দিলেও ভালোবাসার মর্যাদা সবাই ধরে রাখে না। প্রথম জীবনের স্বপ্নছোঁয়া দিনগুলো একসময় পানসে হয়ে যায়।
বাঁধনহারা পাখি দরজা খোলা দেখলেই যায় উড়ে। খাঁচায় থাকে না বন্দী হয়ে। আলো-আঁধারির গোলকধাঁধায় বাঁধা পড়ে লাভ নেই। রাতের কালো অন্ধকার শেষে ভোর ঠিকই আসে। আলোর ঝলকানিতে মুছে যায় রাতের সব দুঃস্বপ্নের চিহ্ন। আমাদের চারপাশটা বড় অদ্ভুত। আবেগহীনতার যুগে বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা কখনো চিরস্থায়ী হয় না। আগুন ঝলকানো ভালোবাসা একসময় সান্ধ্যপ্রদীপের তেল ফুরানোর মতো শেষ হয়ে যায়। শুধু পোড়া দহনের ক্ষত বয়ে বেড়াতে হয়। পুরনো স্মৃতিগুলো ঘুরেফিরে আসে কষ্ট হয়ে। তার পরও আমরা বারবার সঠিক ঠিকানা খুঁজে বেড়াই। চিনতে পারি না আপনারে। ভালোবাসার মানুষ ও স্বার্থহীন বন্ধু বাছতে বাছতে একটা জীবন কেটে যায়। জীবনের সৌন্দর্যটুকু দেখা হয় না। লড়াই করতে করতে ভিতর ক্ষয়ে গেলেও বলার থাকে না কিছুই। কাকের গল্প এক কাক এসে বসল গাছের ডালে। মুখে তার একটুকরো মাংস। এক শিয়াল নীচে থেকে তাই দেখে ভাবতে লাগল, কিভাবে ঐ মাংসটুকু সে নিজে খেতে পায়। অবশেষে শিয়াল কাকের কা কা শব্দের কারণে কাকের মুখ থেকে পড়ে গেলে মাংসের টুকরো পেয়ে খেল শিয়াল কিন্ত কাকের কষ্ট আর নষ্ট শিয়ালকে কাক চিনতে পারেনি। আমার পেশাগত জীবনে অনেক দেখেছি,শুনেছি কিন্ত কিছু দুষ্টচক্রের হাতে মানুষ কত ক্ষতবিক্ষত হয়ে হৃদয় ভেঙ্গে দিতে তাও দেখেছি। কাছের মানুষটির পাশে থেকে নষ্টদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে মেধাকে যারা ক্ষতবিক্ষত করে দিতে পারে তাদেরকে চিনতে পারেনি অনেকে। চিনতে পারেনি আমি নিজেও। আমি শ্রদ্ধেয় নঈম নিজাম ভাইয়ের লেখার সাথে একমত পোষণ করেছি এবং করতে বাধ্য হয়েছি।তিনি আরও বলেছেন; ক্ষমতায় বসার পর সবকিছু চলে যায় রাজনৈতিক কর্মীদের বাইরে। আমলাকুল, কামলাকুল, হাইব্রিডকুল তৈরি হয়। তাদের হাতেই সব সর্বনাশ হয়ে যায়। কেউ টের পায় না। যখন পায় তখন আর কিছুই করার থাকে না। রাজনীতির জগৎটাই জটিল। ক্ষমতার আকাশছোঁয়া চেয়ার বাস্তবতাকে আড়াল করে রাখে।
ক্ষমতার আকাশ থেকে মাটি দেখা যায় না। একটা অহংকারের ভাব তৈরি করে। তখনই কিছু ভুল সিদ্ধান্ত, সমন্বয়হীনতায় সর্বনাশ হয়ে যায়। একবার ভুল হলে সে চক্রবাঁকে কাটিয়ে দিতে হয় বাকি জীবন। যাক শেষ করার আগে শেষ কথা বলতে চাই কাক কিন্ত কাকই । কাক যখন গাছের ডালে আটকা পড়ে শিয়াল তখন খেতে চেষ্টা করে। কাক যতই বুদ্ধিমান হোক না কেন শিয়াল কিন্ত পাল্টে দিতে পারে তার অবস্থান। নষ্ট লোকদের কারণে ভালোবাসার লোক গুলোও সান্ধ্যপ্রদীপের তেল ফুরানোর মতো শেষ হয়ে যায়। চলবে