বাদল আহাম্মদ খান আখাউড়া থেকে:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া এলাকায় তাকে আগেও দেখেছি। বৃদ্ধ বয়সে চা বিক্রি করতে দেখে কৌতুহল হয়েছে কথা বলার কৌতূহলের কারণ তার জীবন সংগ্রাম। জীবনের শেষ লগ্নে চায়ের ফ্লাস্ক বয়ে বেড়াতে যেন অনেক কষ্ট হচ্ছে।আখাউড়া ফুলকলি দোকানের সামনে এসে আস্তে করে বলছে বাবা চা লাগবে এসময় সুনীল বণিক কে বসিয়ে আলাপ শুরু করি।
চাচা এই বৃদ্ধ বয়সে চা বিক্রি করেন কষ্ট হয় না, আপনার কি ছেলে মেয়ে নেই?
কষ্ট তো হয় তারপরও পেটের দায়ে কাজ করতে হচ্ছে এক ছেলে দুই মেয়ে আছে, মেয়েদের বিয়ে দিয়েছি। ছেলে প্রতি মাসে এক হাজার বারোশো টাকা দেয় এ টাকা দিয়ে সব খরচ চলে না।
কথায় কথায় ব্যবসার হালচাল জিজ্ঞাসা করলেই তার চোখ বেয়ে খসে পড়ে জল।ব্যক্তিগত জীবনের অনেক কথাই জানা গেল ৬৫ বছর বয়সী এই চা–বিক্রেতার।
আখাউড়া পৌরশহরের মায়াবী সিনেমা হলের পাশে ছিল চায়ের দোকান। চা বিস্কুট আর সিগারেট বিক্রি করে বেশ ভালো ই চলতো দিনকাল।হঠাৎ করে দোকানের বিটের মালিক একদিন বলেন কাল থেকে তোমার এ দোকান ছেড়ে দিতে হবে। তখন থেকেই দুর্ভোগ নেমে আসে তার জীবনে।
ভাগ্যান্বেষণে শুরু করবেন ফেরি করে চা বিক্রি কিন্তু এতেও যে পুঁজির প্রয়োজন। ফ্লাস্ক কিনতে হবে সাথে প্রয়োজন কিছু চায়ের কাপ। আলমারির দোকানদার নাছির মিয়া সহ কয়েকজন লোকের সহযোগিতায় অর্থের অভাব পূরণ হয়েছে চায়ের ফ্লাস্ক কিনে দিয়েছেন তারা।এর পর থেকে ই শুরু করলেন ফেরি করে চা বিক্রি।
সুনীল বনিক কলেজ পাড়া এলাকায় টিনশেড ঘরের একটি কক্ষে পরিবার নিয়ে ভাড়ায় থাকেন। বার্ধক্যের কারণে বেশি দূর হাঁটতে পারেন না। কলেজপাড়া থেকে সড়ক বাজার এলাকায় নিজের তৈরি করা চা ফেরি করেন। তাতে আয়-রোজগার কেমন হয়? সুনীল বণিক বলেন দিনে ১০০ থেকে ১৫০ ট্যাকা। দৈনিক এই দিয়ে কোনরকমে সংসার চলে। সরকারি কোন ধরনের সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা?
সুনীল বণিক বলেন আমার বয়স ৬৫ কিন্তু নিবন্ধন কার্ড এ কেডা জানি কম দিয়া দিছে। এই বয়সে এসেও নাকি আমার বয়স হয়নি ভাতা পাওয়ার মতো।