অপরাধ পত্র রিপোট :
আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী ১১ মার্চ বিশেষ বর্ধিত সভা এবং সম্মেলনের তারিখ ও সময় নির্ধান করা। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্রগুলোর মতে, আওয়ামী লীগ চেষ্টা করছে মার্চের মধ্যে সম্মেলন শেষ করতে, যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে ১৪মে ২০২২ইং এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে এবং ১লা এপ্রিল ২০২২ইং কসবা পৌর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৩ সালের নির্বাচনকে মাথায় রেখে আওয়ামী লীগ সম্মেলনের সময়সূচী এগিয়ে নিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সম্মেলন মানে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে উত্তেজনা। কারণ আওয়ামী লীগের আহবায়ক বা সভাপতি আনিসুল হক এমপি আওয়ামী লীগের সবচেয়ে জনপ্রিয়তম ব্যক্তি। দলের ১ জন নেতাকর্মীও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপির সভাপতি পদ নিয়ে কোন প্রশ্ন তুলবে না। আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন যে, আনিসুল হক যতদিন থাকবে ততদিনই তিনি কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। আর আওয়ামী লীগ নেতারা এটাও মনে করেন যে, আনিসুল হকের কোন বিকল্প নেই। আর এর প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদকের পদটি সবচেয়ে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক পদে কেউ নেই আহবায়ক কমিটি দিয়ে চলছে।
এই প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে নানামুখী আলোচনা। কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এরকম আলোচনায় অনেকগুলো নাম নিয়েই কথাবার্তা হচ্ছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। যাদের নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে সেরকম কয়েকজনের মধ্যে রয়েছে: কসবা উপজেলা সাবেক যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক গোলাম হাক্কানী,কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক কাজী আজহারুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এড.রাশেদুল কাওছার ভুঁইয়া জীবন, কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও পৌর মেয়র এমরান উদ্দিন জুয়েল, কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান এড.আনিসুল হক ভুইয়া প্রমুখ।
গোলাম হাক্কানী: এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য সবচেয়ে আলোচিত নাম গোলাম হাক্কানী। কিন্ত তিনি এখন কসবা পৌরসভার মেয়র । দলের ত্যাগী-পরীক্ষিত একজন নেতা। তৃণমূল থেকে উঠে এসেছেন, ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন, যুবলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন, এখন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক। তিনি একজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হলেও যেহেতু কসবা পৌর মেয়র হয়েছেন তাই সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে তিনি কিছুটা পিছিয়ে আছেন বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের নেকাকর্মীরা।
কাজী আজহারুল ইসলাম: কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক। তিনি কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সেই ভাগ্যবান নেতাদের একজন যিনি একাধারে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আর দলের বাইরে তার একটা আলাদা ইমেজ এবং সুনাম রয়েছে। তিনি একজন সংগঠক হিসেবে পরিচিত। দলের তৃণমূলের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে এবং খোঁজখবর রাখেন।এ সমস্ত বিবেচনা থেকে একজন গ্রহণযোগ্য রাজনীতিবিদ হওয়ার পরও বর্তমান প্রেক্ষাপটে আর কসবা পৌর মেয়র পদটুকু শাহপুর একই গ্রামের যাওয়ার পর সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে তিনি কিছুটা পিছিয়ে বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের নেকাকর্মীরা।
এড.রাশেদুল কাওছার ভুঁইয়া জীবন: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এড. রাশেদুল কাওছার ভুঁইয়া জীবনের নামও আলোচনায় আছে। বিগত দিন গুলোতে তিনি আওয়ামী লীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীসহ সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে এখনও আছে। সাবেক এমপি এড.শাহআলমের রাজনীতির সাথে একমত পোষণ করতে না পারায় বর্তমান আইনমন্ত্রীর সাথে সংযুক্ত হয়ে এপিএসও হয়েছেন। অবশেষে তিনি আইনমন্ত্রীর দয়ায় বর্তমানে কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও হয়েছেন ও যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর রাজনৈতিক পরিপক্কতা আর কসবার ৫ মার্চের ঘটনায় সবার নজর কেড়েছে। যেহেতু তিনি কসবা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সেহেতু সাধারণ সম্পাদক হওয়ার দৌড়ে তিনি কিছুটা পিছিয়ে বলেই মনে করেন আওয়ামী লীগের নেকাকর্মীরা। তবে অনেকেই ধারণা করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে এড.রাশেদুল কাওছার ভুঁইয়া জীবনকে দিলে বা আসলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
এমরান উদ্দিন জুয়েল: আওয়ামী ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এমরান উদ্দিন জুয়েল তিনি সংগঠনের অন্যতম মুখপাত্রও বটে। আওয়ামী ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে তার রাজনীতিতে উস্খান হয়েছে অত্যন্ত দ্রুতগতিততে এবং সাংগঠনিক বিষয়ে তিনি এখন ইতিবাচক ভূমিকা রাখছেন। রাজনীতিতে তেমন প্রভাবশালী না হলেও আইনমন্ত্রী ও নেতা কর্মীদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। তিনি কসবা পৌর সভার সাবেক মেয়র ছিলেন। তার সাহস, সততা আর সাংগঠনিক তৎপরতায় এই প্রজন্মের কাছে রাজনীতিবিদ হিসেবে তাঁর সুনাম রয়েছে। সরকার বিরোধী রাজনৈতিক শক্তির সাথে মোকাবেলা করতে হলে স্থানীয় জনগোষ্ঠী দলের পক্ষ হয়ে কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে। কসবা সদরের বিরোধীদলসহ একটি প্রভাবশালী পক্ষ আর বিভিন্ন কারণেই দলের সাধারণ সম্পাদক পদে না আসতে পারেন এ কথাও আওয়াজ উঠেছে। কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে,যে কোনো কর্মী তাদের যেকোনো সমস্যা সরাসরি এমরান উদ্দিন জুয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আর এই সব কারণে দলের সাধারণ সম্পাদকের দৌড়ে তার নামটাও উচ্চারিত হচ্ছে। তবে অনেকেই মনে করেন যে এমরান উদ্দিন জুয়েল অপেক্ষাকৃত তরুণ।এত তরুণকে এখনই সাধারণ সম্পাদক দেওয়া হবে কি না,এটি একটি বিবেচ্য বিষয় বলে অনেকে মনে করছেন। তবে এমরান উদ্দিন জুয়েলকে নিয়ে চমক আসতে পারে বলেও নেতাকর্মীদের আড্ডায় শোনা যায়।
এড.আনিসুল হক ভুঁইয়া: আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড.আনিসুল হক ভুইয়া।তিনি আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক ও একজন দক্ষ সংগঠক বটে। তিনি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বাড়ি পূর্বাঞ্চল উপজেলা সদরে সরকার বিরোধী রাজনীতি দলের সাথে মোকাবেলা করতে সম্ভব হবে না বলে নেতাকর্মীদের আড্ডায় শোনা যায়। পরিশেষে কসবা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অনেক চমক আসতে পারে বলেও নেতাকর্মীদের বিভিন্ন আড্ডায় শোনা যায়।তবে শেষ পর্যন্ত কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক কে হবেন তা চুড়ান্ত করবেন আওয়ামী লীগ।