বাদল আহাম্মদ খান আখাউড়া প্রতিনিধি: গতকাল ৫ই আগস্ট রোজ শুক্রবার সকাল ১০.০০ ঘটিকায় আখাউড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর জ্যৈষ্ঠ পুত্র, শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩’তম জন্মবার্ষিক উপলক্ষে শোকাবহ আগস্ট এর কথা বিবেচনায় রেখে উপজেলা দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।
উক্ত আলোচনা সভা, মিলাদ ও দোয়ায় হাজারো আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও অন্যান্য অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের উপস্থিতি থাকলেও অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফুল ইসলামের আনন্দ উল্লাস ও নৌকাভ্রমণের। সম্প্রতি উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শরীফুল ইসলামের ব্যক্তিগত ফেসবুক একাউন্টে বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে আনন্দ উল্লাস ও তিতাস নদীতে নৌকাভ্রমণের স্থিরচিত্র দিয়ে আনন্দঘন মুহুর্তের কথা প্রকাশ করে বলেন!
প্রতিবছরের ন্যায় এবারো এলাকার বন্ধুবান্ধব, ছোট ও বড় ভাইদের নিয়ে নৌকা ভ্রমণে বেড়িয়েছি। নৌকায় রয়েছে সাউন্ড সিস্টেম, জেনারেটর, রান্নাবান্না, খাওয়াদাওয়া সহ সকলের রঙিন পোশাকে ইত্যাদি। তিনি আরো ধারাবাহিক এ আনন্দ ভ্রমণের বিগত বছরেরও কিছু স্মৃতি দিলাম (পাঠকের সুবিধার্থে ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট দেয়া হলো)।
উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মীবান্ধব এক জনপ্রিয় ছাত্রনেতা বলেন! সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতার এইসমস্ত বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে আমরা বরাবরই লজ্জিত। সে প্রায়ই দলীয় দিকনির্দেশনার তোয়াক্কা না করে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করে থাকে এটা নতুন কিছু নয় এবং ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনেও মোটা অংকের নগদ অর্থের বিনিময়ে পছন্দের চেয়ারম্যান/মেম্বার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে বোমাবাজি, ব্যালট বাক্স ছিনতাই, ভোট কেন্দ্র দখল থেকে শুরু করে নানান অপকর্ম করেছে তার পরিবার ও গোত্রীয় লোকজনের মাধ্যমে। যা অত্র অঞ্চলের যুবক-তরুণ, প্রবীণ মুরুব্বি সবাই জানে, অনেকেই এইসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী। শুধু তাই নয়, এই শরীফের রাজনৈতিক ও পারিবারিক অতীত আর বর্তমান নিয়েও রয়েছে নানা বিতর্ক। আমার জানামতে সে নগদ অর্থের বিনিময়ে ছাত্রশিবিরের ওয়ার্ড এর সভাপতি থেকে ইউনিয়ন ও উপজেলা ছাত্রলীগের পদ খরিদ করেনক্রয়। যার নেই কোনো জনমত, সমর্থক বা কর্মী বাহিনী। তার দাদা মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় আজও পাকিস্তানিদের অন্যতম দালাল (রাজাকার) হিসেবে চিহ্ণিত, এর প্রমাণ সহ রয়েছে আমার কাছে এবং মুক্তি যোদ্ধা কমান্ডারের নিকট এবং বাবা আর বড় ভাই জামায়াতের অন্যতম সংগঠক। সংগ্রাম, স্বাধীনতা ও ঐতিহ্যের দল বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কিছু সংখ্যক দুর্নীতিবাজ ও চোরাচালানকারী সাবেক নেতাদের ছত্রছায়ায় সৃষ্টি হয়েছিলো শরীফের ছাত্রলীগের পথচলা। সেই থেকে সে এবং বাপ-দাদা তথা গোত্রীয় লোকজন এলাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা পরিচালনা ও উন্নয়ন কাজের নামে যুগ যুগান্তর ধরে পরিচালনা করে আসছে ধর্মব্যবসা। মসজিদ মাদ্রাসার নামে সরকারি টি,আর ও কাবিখা/কাবিটার একাধিক প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলেও লোকমুখে অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের জামে মসজিদের এক নিয়মিত মুসল্লী নাম প্রকাশে অনিচ্ছা পোষণ করে বলেন! শরীফের দাদা তালিকাভুক্ত রাজাকার মুরাদ মোল্লা আমাদের আওড়ারচর গ্রামে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নাম করে সঞ্চিত অর্থ আত্মসাতের জন্য রাতারাতি নিজের বাড়ির সম্মুখে নামমাত্র একটি মাদ্রাসা স্থাপন করে প্রাপ্ত অনুদানের সকল অর্থ আত্মসাৎ করে এবং যার ফলশ্রুতিতে আমাদের গ্রাম কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। তার বাবা জামশেদ মোল্লা জামায়াতের অন্যতম সংগঠক ও ওয়ার্ড সভাপতির পদ থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আওয়ামী লীগে যোগদান করে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব নেয় প্রভাব বিস্তার করে, পরবর্তীতে দায়িত্বহীনতা ও মসজিদ উন্নয়ন কাজের অনিয়মের দায়ি গ্রামবাসী সভাপতির দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয় এবং হাজী ইমাম উদ্দিন মোল্লাকে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করেন। জামশেদ মোল্লা পবিত্র রমজান মাসে ইমাম সাহেবের বেতন দেয়াকে কেন্দ্র করে সভাপতি হাজী ইমাম উদ্দিন মোল্লাকে মসজিদ থেকে লাঞ্চিত করে বের করে দেয় এবং মসজিদ কমিটির রেজুলেশন জালিয়াতি করে সরকার কতৃক প্রদত্ত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজের জন্য ০৪ মেট্রিক্স টন গম আত্মসাৎ করেন। যা নিয়ে এখনো স্থানীয় এলাকাবাসী ও গ্রামবাত, মুসল্লিয়ানদের মনে ক্ষোভ বিরাজমান। আমার এইসব কথার লিখিত প্রমাণ পাওয়া যাবে অনতিপূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নিকট দায়েরকৃত দেলোয়ার হোসেন দুলালের অভিযোগে।
একই গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন! শরীফের দাদা তালিকাভুক্ত রাজাকার মুরাদ মোল্লা তার নাতি ছাত্রলীগ নেতার প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় কেবল ধর্ম ব্যবসায় নয়! যেকারো যেকোনো ঝামেলা সৃষ্টি হলে নগদ অর্থের বিনিময়ে সাক্ষীও প্রদান করে থাকেন। যার ভুক্তভোগী আমি ও আমার পরিবার। এলাকাবাসী সবাই জানেন এই বিষয়টি, যে মুরাদ মোল্লা নগদ ৫০,০০০/- টাকার বিনিময়ে আমি ও আমার পরিবার পরিজনদের বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষপ্রদান করে আমাদের ছয় মাসের সাজা খাটিয়েছে। শরীফের বাবাও মাতাব্বরির নামে যেকোনো ঝামেলা বা নিরীহ মানুষের ভুল বুঝাবুঝি হলেও সুবিধাজনক একটা পক্ষে অবস্থান নিয়ে তার ছেলের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অর্থ বাণিজ্য সহ মারামারি, মামলা মোকদ্দমায় নিয়ে যায় এবং তারই আরেক ছেলে জেলা আদালতে কর্মরত তাকে দিয়ে মোকদ্দমা বাণিজ্য চালায়। তাদের অত্যাচার, জুর-জুলুম এবং ধর্মবাণিজ্যে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ।
আরেক মুসল্লী বলেন! তারা বাপ-দাদা ও ছেলে শরীফ আওয়ামীলীগ সরকারের প্রভাব বিস্তার করে করে প্রতিবার মসজিদ, মাদ্রাসা পরিচালনায় বিভিন্ন কায়দা কৌশলে তারা সভাপতি/সম্পাদক, ক্যাশিয়ার বিভিন্ন পদ সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে নিজেদের মধ্যে বাগিয়ে নেয়। যার দরুন আজকে আমাদের আওরারচর গ্রামে যা বর্তমানে আদমপুর-রাজেন্দ্রপুর নামে পরিচিত সেখানে জামে মসজিদ একটির স্থলে ৪ থেকে পাচটি।
মোগড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আরেক নেতা বলেন! সে কখনোই ছাত্রলীগের কেউ হতে পারেনা। শরীফ নিজে দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের পদ ব্যবহার করে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ভাবে অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অনেক সুবিধা নিয়েছে, অথচ সৃষ্টি করেনি একটিও কর্মী। কিন্তু বর্তমান উপজেলা ছাত্রলীগের সুদক্ষ ও কর্মী বান্ধব নেতৃত্ব গুনে অত্র অঞ্চলে শত শত ছাত্রলীগের নেতাকর্মী, তাদেরকে রাজাকার, জামায়াত, শিবির এই পরিবার সেইসব নেতাকর্মীদের কিশোর গ্যাং বলে অপপ্রচার করে ছাত্রলীগের সুনাম ক্ষুন্ন করতে চায়। মোগড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অচিরেই উপজেলা ছাত্রলীগের সাথে পরামর্শ করে উক্ত অপপ্রচারের বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করবে।